ইতিহাস, দশম শ্রেণী

সভ্যতার বিকাশে ‘যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস’-এর গুরুত্ব

Admin

No Comments

যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের জীবনকে সহজ ও গতিময় করেছে। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সভ্যতার বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

আদিম যুগে মানুষের যোগাযোগের একমাত্র পথ ছিল জলপথ। জলপথে যাবার জন্য তারা তৈরি করেছিল কাঠের তৈরি ভেলা। উপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে উল্লেখযোগ্য যানবাহন ছিল-গরুর গাড়ি ও পালকি। ভারতের ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা করেন লর্ড ডালহৌসি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে। প্রথম বোম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত রেল লাইন পাতা হয়।

এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত, বার্তা প্রেরণের জন্য মাধ্যমগুলির উদ্ভব ও বিবর্তন এবং জনসমাজে তার প্রভাবের দিকগুলি নিয়ে আলোচনার ইতিহাসকেই সাধারণভাবে যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস বলা হয়। ১৯৬০-৭০ এর দশক থেকেই যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস চর্চার সূচনা হয়। বর্তমানে এটি সামাজিক ইতিহাস চর্চার একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।এই ইতিহাস চর্চার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন হলেন – নীতিন সিনহা, সুনীল কুমার মুন্সী, জন আর্মস্ট্রং, ডেভিড ব্লা্নডন , উইলিয়াম আর নেস্ট, কলিং ডিভাল, ইয়ান কের প্রমুখ।

Table of Contents

সভ্যতার বিকাশের ইতিহাসে ‘যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস’- এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

ভূমিকাঃ

মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি শুধু ভৌগোলিক দূরত্ব কমিয়েই নয়, বরং অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও রাজনীতির বিকাশেও অবদান রেখেছে।

দূরত্ব কমিয়েছেঃ

আগে মানুষকে পায়ে হেঁটে বা গবাদি পশুর সাহায্যে ভ্রমণ করতে হতো। পরে রথ, নৌকা, রেলগাড়ি, মোটরগাড়ি ও বিমান আবিষ্কারের ফলে ভ্রমণ সহজ ও দ্রুত হয়েছে।

বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নঃ

নদী, সমুদ্র ও স্থলপথে উন্নত যানবাহন থাকায় দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে। এতে অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে।

সাংস্কৃতিক বিনিময়ঃ

বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের মানুষ সহজে একে অপরের সঙ্গে মিশতে পেরেছে। এতে ভাষা, খাদ্য, পোশাক ও জীবনধারার আদান-প্রদান ঘটেছে।

প্রশাসন ও রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ

প্রাচীন রোমান ও মুঘল সাম্রাজ্যে সুগঠিত রাস্তা ও ডাক ব্যবস্থা থাকায় শাসনব্যবস্থা উন্নত হয়। আধুনিক যুগেও সরকার প্রশাসনের কাজে উন্নত যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করে।

যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নঃ

যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার ফলে মানুষ চাঁদে পৌঁছাতে পেরেছে। এখন মোবাইল ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষ মুহূর্তেই দূরের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে।

যুদ্ধ ও বিশ্বরাজনীতিঃ

যানবাহনের উন্নতির ফলে রাষ্ট্রগুলোর সামরিক শক্তি বেড়েছে। বিশ্বযুদ্ধ ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করেছে।

উপসংহারঃ

যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সভ্যতার বিকাশের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এটি বাণিজ্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও প্রতিদিনের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। উন্নত যানবাহন ব্যবস্থা ছাড়া আধুনিক বিশ্ব কল্পনাই করা যায় না।

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে নারী সমাজের অংশগ্রহণ ও সীমাবদ্ধতা : সম্পূর্ণ উত্তরটি দেখতে Click করুন এখানে।

তথ্যসূত্রঃ

এই ব্লগের কাজ করতে Wikipedia এর সাহায্য নেওয়া হয়েছে

সভ্যতার বিকাশে ‘যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস’-এর গুরুত্ব

প্রশ্ন: ভারতে রেলপথ কবে প্রবর্তিত হয় ?

উত্তর: ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ডালহৌসির সময় ভারতের প্রথম রেলপথ প্রবর্তিত হয়।

প্রশ্ন: টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা কে করে তোলেন ?

উত্তর: ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে স্যামুয়েল মোর্স আমেরিকায় সর্বপ্রথম টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা করে তোলেন।

প্রশ্ন: টেলিফোন কে আবিষ্কার করেন ?

উত্তর: ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেন।

প্রশ্ন: পিচ দিয়ে রাস্তা তৈরির কৌশল কে আবিষ্কার করেন ?

উত্তর: ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে টেল ফোর্ড ও ম্যাকডাম পিচ দিয়ে রাস্তা তৈরির কৌশল কে আবিষ্কার করেন।

প্রশ্ন: সুয়েজ খাল কবে খনন করা হয় ?

উত্তর: ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে সুয়েজ খাল খনন করা হয়। এর ফলে অত্যন্ত কম সময়ে লন্ডন থেকে বোম্বে আসার যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।

প্রশ্ন: ‘ভারতে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার জনক’ বা ‘ভারতীয় রেলপথের জনক’ কাকে বলা হয়

উত্তর: লর্ড ডালহৌসিকে। তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিক যুগের সূত্রপাত করেন। তাকে ভারতের আধুনিক টেলিগ্রাম ব্যবস্থার জনক বলা হয়।

প্রশ্ন: কোথায় ট্রাম ব্যবস্থা সূচনা হয় ?

উত্তর: ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে ট্রাম ব্যবস্থার সূচনা হয়।

প্রশ্ন: কলকাতায় ট্রামব্যবস্থার সূচনা কবে হয় ?

উত্তর: ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ঘোড়ায় টানা ট্রাম ব্যবস্থা সূচনা হয়।

প্রশ্ন: কলকাতায় কবে বৈদ্যুতিক ট্রামযাত্রা সূচনা হয় ?

উত্তর: ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় বৈদ্যুতিক ট্রানযাত্রা সূচনা হয়।

প্রশ্ন: যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের চলাচল ও তথ্য আদান-প্রদানকে সহজ করেছে। এটি বাণিজ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও প্রযুক্তির উন্নতিতে বিশাল ভূমিকা রেখেছে।

আরো পড়ুনঃ

Sharing Is Caring:

Leave a Comment